মাদরাসা পরিচিতি নাম:
জামিয়াতুল উলূম আল—ইসলামিয়া সিরাজনগর, কলাতিয়া, কেরানীগঞ্জ ঢাকা
পরিচালনায়: আল মারকাজুল ইসলামী বাংলাদেশ
অবস্থান: ঢাকা কেরাণীগঞ্জ কলাতিয়া সিরাজনগর (লাল কবর) এ সবুজ শ্যামল মনোমুগ্ধকর গ্রামীণ পরিবেশে বিশাল ঝিলের তীরে ১০০শত বিঘা জমির বৃহৎ আয়তন নিয়ে অবস্থান এই জামিয়ার।
লক্ষ ও উদ্দেশ্য: আমাদের এই জামিয়া দারুল উলূম দেওবন্দের উত্তরসূরি, ১৮৬৬ইং দারুল উলূম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠিত হয়। জন্মলগ্ন থেকেই দারুল উলূম দেওবন্দ তার উদ্দেশ্যে শতভাগ সাফল হয়ে আসছে। অত্র জামিয়াও সে একই উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত। আলহামদুলিল্লাহ অত্র জামিয়ার শিক্ষা সমাপণকারী ছাত্ররাও জামিয়ার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
জামিয়ার শিক্ষা প্রকল্প:
অত্র জামিয়ার শিক্ষা কার্যক্রমসমূহ নিম্নরূপ:
কিন্ডার গার্টেন বিভাগ: অভিজ্ঞ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকমণ্ডলী দ্বারা পরিচালিত। যত্ন সহকারে শিশুদেরকে আধুনিক পদ্ধতিতে পাঠদান করা হয়। যার দরুন অতিরিক্ত প্রাইভেটের প্রয়োজন হয় না। শিক্ষার্থীরা ক্লাসের পড়া ক্লাসেই আয়ত্ত করতে পারে। হাতের লেখা সুন্দর করার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়। বাংলা, ইংরেজি, অংক শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষা যেমন—আরবী শিক্ষা, তাজবিদ,কেরাত,মশক, নূরানী পদ্ধতিতে হাদিস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় মাসয়ালা মুখস্থ করানো হয়।
নূরানী মক্তব ও নাজেরা বিভাগ: এ বিভাগে শিশুদেরকে তিন বৎসরের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা দান করা হয়। এতে আমপারা (৩০পারা) হিফজ সহ সম্পূর্ণ কোরআন শুদ্ধরূপে পাঠদান ও পঞ্চম শ্রেণির মান পর্যন্ত বাংলা ইংরেজি,অংক পড়ানো হয়। তাছাড়া উর্দু ভাষায়ও তাদেরকে পারদর্শী করে তোলা হয়। বাস্তব প্রশিক্ষণসহ নামায,রোযা ইত্যাদি দ্বীনি বিষয়ের মাসয়ালা মাসায়েল এবং কালিমাসহ প্রয়োজনীয় দোয়াসমুহ তাদেরকে আয়ত্ত করিয়ে দেওয়া হয়। আর যে সকল ছাত্ররা স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে ইলমে দ্বীন শিখতে আগ্রহী হয়ে আসছে তাদেরকে আলাদাভাবে এক বৎসরের মধ্যে আরবি উর্দু কিতাব পড়িয়ে কিতাব বিভাগে পড়ার উপযোগী করে তোলা হয়।
হিফজ বিভাগ: কোরআন শরিফের নাজেরা পড়তে সক্ষম ছাত্রদের মেধাভেদে দুই থেকে তিন বছরের মধ্যেই তাজবীদ ও তারতিল সহ কোরআন মাজিদ হিফজ করানো হয়।
কিতাব বিভাগ: এটি জামিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থাপনার প্রধান বিভাগ। ইসলামী শিক্ষার মৌলিক ও প্রধান বিষয়গুলো— কোরআন, তাফসির, উসুলে তাফসির, হাদিস,উসুলে হাদিস,ফিকাহ,উসুলে ফিকাহসহ বালাগাত,মানতিক, হিকমাত, আরবি, ফারসি সাহিত্য প্রভৃতি বিষয়গুলো এ বিভাগেই পড়ানো হয়। এ বিষয়গুলোকে পর্যায়ক্রমে তাকমিল মারহালায় (দাওরায়ে হাদিস/মাস্টার্স) পর্যন্ত পাঠদান করা হয়।
জামিয়ার বিশেষ বিভাগ সমূহ: আল—মাকাজুল ইসলামী কর্তৃক পরিচালিত ইসলামী আইন (ইফতা) বিভাগ ও আরবী সাহিত্য (আদব) বিভাগের সুনাম রয়েছে দেশজুড়ে। বাংলাদেশের প্রবীণ ইসলামী আইন ও আরবি সাহিত্য বিভাগের অন্যতম। বর্তমানে এই জামিয়ার অন্তর্গত উক্ত বিভাগদ্বয়।
জামিয়ার শাখা প্রতিষ্ঠান:
১: আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম অন্ধ বালক মাদ্রাসা
২: নাদিরা সুলতানা বালিকা মাদ্রাসা
দাওয়াত ও তাবলীগ: প্রত্যেহ এশার নামাযের পর সমষ্টিগতভাবে উস্তাদের তত্ত্বাবধানে কিতাবী তালিম করানো হয়। প্রতি বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টার জন্য এলাকায় জামাত প্রেরণ করা হয়। এবং শুক্রবার বাদ আসর মহল্লায় গাশতের আমল হয়।
শিক্ষা সংক্রান্ত অন্যান্য কর্মসূচি:
১.ছাত্র পাঠাগার: ধারাবাহিক শিক্ষাক্রমের পাশাপাশি ছাত্রদের বহুমুখী জ্ঞান অর্জনের জন্য বিভিন্ন বিষয়ের ওপর তথ্যবহুল বই পুস্তকসমৃদ্ধ একটি পাঠাগার রয়েছে। জ্ঞান পিপাসু ছাত্ররা সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত কিতাব পড়া—লেখার ফাঁকে ফাঁকে স্বীয় রুচি ও প্রয়োজন অনুযায়ী বই—পুস্তক সংগ্রহ করে তাদের জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়।
২.সাপ্তাহিক বক্তৃতা প্রশিক্ষণ: সর্ব সাধারণের মধ্যে দ্বীনের বাণী পৌঁছানোর যোগ্যতা অর্জনের লক্ষ্যে ছাত্রদের বগ্নিতা শক্তি বৃদ্ধির জন্য সাপ্তাহিক বক্তৃতা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। জামিয়ার ছাত্রদেরকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে উস্তাদের তত্ত্বাবধানে বক্তৃতা প্রশিক্ষণ পরিচালিত হয়।
৩.সুন্দর হস্তলিপি ও নাহু—সরফের বিশেষ প্রশিক্ষণঃ জামিয়ার পক্ষ থেকে অভিজ্ঞ হস্তলিপিবিদ্ধ দ্বারা ছাত্রদের সুন্দর হস্তলিপি প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করা হয় নিয়মিত। তাছাড়া প্রত্যেক রমজানে নাহু—সরফ আরবি সাহিত্য এবং ইংরেজি শিক্ষা কোর্সের আয়োজন করা হয়।
জামিয়ার বিশেষত্বঃ এই জামিয়ার নিরাপত্তা সুনিশ্চিতকরন ও শিক্ষার মানোন্নয়নে শ্রেণি কক্ষসহ পূর্ণ জামিয়া সার্বক্ষণিক CCTV নিয়ন্ত্রণাধীন।